শিরোনাম

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

Responsive Advertisement

ধারাবাহিক : মিসওয়াকের মহাবিস্ময়কর রুপ (পর্ব-১)

দাঁত-গন্ধ-পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা-পবিত্রতা
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘(মসজিদে কুবার আশেপাশে) এমন লোকজন রয়েছে যারা পবিত্রতা পছন্দ করেন আর আল্লাহ পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালবাসেন’। (সুরা আত তাওবা আয়াত নং ১০৮)।
‘ হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ), নবী করিম সাল¬াল¬াহু আলাইহি ওয়া সাল¬াম থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন বনী আদমের প্রত্যেকটি কাজ তার নিজের জন্য। কেবল রোজা এর ব্যতিক্রম। কেননা রোজা আমারই ( আল্লাহর জন্য) জন্য এবং আমিই (আল্লাহ) এর বিনিময় দেব। আর রোজাদারের মুখের ঘ্রাণ আল্লাহ তা’য়ালার নিকট মেশক আতরের তুলনায় ও অধিক সুঘ্রাণপূর্ণ। (বোখারী শরীফ-হাদিস নং ৩৪২২)।
অন্য আর একটি হাদিসের (এ সম্পর্কিত) কিছু অংশ উদ্ধৃত হল। ‘আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন --------------- যার করতলে আমার জীবন, সে সত্তার কসম। রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর নিকট কস্তুরীর সুঘ্রাণ হতেও উত্তম। ---------। (বোখারী শরীফ- হাদিস নং ১১০৩)।
উপরোক্ত হাদিসদ্বয় হতে বুঝা যায় মানুষের মুখের গন্ধ বা ঘ্রাণ মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর নিকট কত প্রিয়! মানুষের মুখের গন্ধ বিভিন্ন কারণে হতে পারে। এক ঃ মানুষের মুখের ভেতরে খাদ্য কণা জমে তা পচে গিয়ে; দুই ঃ মুখের ভিতর ঘা হয়ে পুঁজ তৈরি হলে; তিন ঃ রোজার কারণে; চার ঃ দাঁতে মিসওয়াক বা ব্রাশ ব্যবহার না করলে ইত্যাদি। সুতরাং রোজা ছাড়া অন্য কোন কারণে গন্ধ বের হলে তা নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে প্রিয় হবে না? কারণ আল্লাহ কুরআনে ঘোষণা করেছেন- “এবং তোমার পরিচ্ছদ পবিত্র কর এবং মলিনতা দূরীভূত কর। (সুরা মুদাচ্ছির আয়াত নং ৪-৫)। মলিনতা বিভিন্ন কারণে হতে পারে তন্মোধ্য দাঁত মুখ পরিষ্কার না করা একটি।
হযরত ইবনে উমার (রাঃ) এর রেওয়াতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মুসলমানগণ! তোমরা তোমাদের শরীরকে পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন রাখবে’। (তিবরানী, সূত্র ঃ হাদিসে নূর ও আধুনিক বিজ্ঞান; পৃষ্ঠা ৫৭)।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘পবিত্রতা অর্জন নামাযের চাবি’। (তিরমিযি)।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ পবিত্র, পবিত্রতাই তিনি পছন্দ করেন’। (তিরমিযি)।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তাহারাত (পবিত্রতা অর্জন করা) ব্যতীত নামায কবুল হয় না এবং খেয়ানতের মালের সাদকাও কবুল হয় না’। (মুসলিম ও তিরমিযি- হাদিস নং ০১, সুনানু ইবনে মাজাহ- হাদিস নং ২৭১)।
এছাড়া কুরআন হাদিসের বিভিন্ন স্থানে পবিত্রতা পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে বলা হয়েছে। পবিত্রতাকে ঈমানের অঙ্গ বলা হয়ে থাকে। (মুসলিম শরীফ)। পবিত্রতা বলতে মানব সমাজের জন্য সকল অংশের পরিচ্ছন্নতাকেই বুঝায়। অর্থাৎ মানুষের মন, দেহ, সমাজ, পরিবেশ প্রভৃতির পরিচ্ছন্নতাই পবিত্রতা। পবিত্রতার আরেক নাম শুদ্ধি। সুতরাং বলতে পারি, অপরিচ্ছন্নতাজনিত মুখের ঘ্রাণ নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট পছন্দনীয় নয় বরং তা ঘৃণিত। এজন্য মুখের পবিত্রতার জন্য মিসওয়াক করা অপরিহার্য।
মিসওয়াকের গুরুত্ব ধর্মীয়, দৈহিক, মানসিক, সামাজিক গুরুত্বের দাবিদার। মানবতার মহান মুক্তির দূত আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্ব কালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ, বিজ্ঞানী। মানুষ তার পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে যে সকল দিকের বিজ্ঞান ভিত্তিক দখল প্রয়োজনীয় সে সকল ক্ষেত্রে অপ্রতিদ্বন্দী তত্ত্ব ও তথ্য প্রদান করেছেন। সে সবের ধারাবাহিকতায় ‘মিসওয়াক’ বা ‘দন্তমাজন’ বা ‘ব্রাশ’ একটি।
কোন বিশাল মাঠে একটি গাছ থাকলে তাকে বাগান বলা যায় না। অনেকগুলো গাছ থাকলে তবেই তাকে বাগান বলা যায়। যদিও তাতে একটি একটি করেই গাছ লাগান হয়। আমরা কি পারি না এক একজন এক একটি করে গাছ লাগিয়ে আমাদের ধরণীকে সুন্দর ও বসবাস উপোযোগি করে সাজাতে?

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Innovative education, Creativity, Practical and Social implications